Skip to main content

When will you have children

When will you have children?' In Bengal, the issue of 'marriage' || 'বাচ্চা নেবে কবে?' বঙ্গদেশে 'বিবাহ' বিষয়টা আদপেই অত্যন্ত গুরুত্বহীন বিষয়। 


মূল লক্ষ্য বাচ্চা। 'দাম্পত্য' শব্দের মানে জিজ্ঞেস করলে এখানে বেশিরভাগ লোকই যুগলে বৈবাহিক যাপন নয়, 'বাচ্চা নেওয়া' বোঝেন।




 যেন বিয়ে করা হয়েছে একসাথে থাকার জন্য নয়, নিজেদের মধ্যেকার সম্পর্ক বোঝাপড়া মজবুত করার জন্য নয়, কেবল বাচ্চা নেবার জন্য। কি এক অদ্ভুত যুক্তিতে লোকে মনে করে বাচ্চা না হওয়া অব্দি মাত্র দুটো মানুষ সম্পূর্ণ হতেই পারেনা, দুটো মানুষের পরিবার? সে তো সোনার পাথরবাটি। অতএব চারিপাশ হতে উপদেশ ভেসে আসে 'You should start a family'। ভেবেছিলাম এ বিষয়ে লিখব না। তবে লিখছি তাতে যদি দুজনের মানসিকতাও বদলায়, তা সমাজের জন্য শুভ হবে।


বউভাতের রাত থেকে এই অত্যন্ত ব্যক্তিগত বিষয়ে অযাচিত কুরুচিকর নাক গলানো শুরু হয়। তারপর সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে ঘুরতে যাওয়া আড্ডা, ন পিসির ছোট ননদ থেকে পাড়ার পুটু, বিয়েবাড়ি থেকে শ্রাদ্ধবাড়ি কিছু লোকের জীবনে নাওয়া খাওয়া উড়ে যায় শুধু একটাই চিন্তায়- 'বাচ্চা নেবে কবে?' Golpo



যেন বাচ্চা Amazon এর কার্টে এড করে রাখাই আছে, অর্ডারটা প্লেস করে দিলেই হয়। সম্ভবতঃ আমরাই একমাত্র দেশ যেখানে লোকে বিবাহিত নারী দেখলেই 'কেমন আছো', 'কেমন সময় কাটছে', 'কোথায় ঘুরতে যাচ্ছো' 'নতুন কী পড়লে' 'নতুন কী সিনেমা নাটক দেখলে' মার্কা প্রশ্ন না করে, জিজ্ঞেস করে বসেন 'এই, বাচ্চা নিচ্ছ কবে?' কারোর PCOD বা বয়স বেশি হলে তো সোনায় সোহাগা। ভাবখানা এমন যেন ওদের বাড়িতে ঘড়ি নেই, আপনার বায়োলজিকাল ক্লকই ওদের ড্রয়িং রুমে টিকটিক করে বাজছে। এ বাদে অতিরিক্ত অসাধারণ কিছু উপদেশ তো রয়েইছে... উদাহরণস্বরূপ স্বামী স্ত্রীর ঝগড়াঝাটি? বাচ্চা নিয়ে নাও। স্বামী স্ত্রীর দারুণ প্রেম? বাচ্চা নিয়ে নাও। শাশুড়ির বয়স কম? বাচ্চা নিয়ে নাও। শাশুড়ির বয়স বেশি? বাচ্চা নিয়ে নাও। অবসর সময় আছে? বাচ্চা নিয়ে নাও। খুব ব্যস্ত? বাচ্চা নিয়ে নাও। সদ্য বিয়ে? দেরী করোনা বাবা! বাচ্চা নিয়ে নাও। অনেকদিন বিয়ে? আর কবে হবে, বাচ্চা নিয়ে নাও। খুব মোটা? বাচ্চা নিয়ে নাও। খুব রোগা? বাচ্চা নিয়ে নাও। বন্ধুর বাচ্চা হয়নি? দেখেচ, আজকাল কত সমস্যা। তুমি নিয়ে নাও। বন্ধুর বাচ্চা হল? তোমারটা কবে হবে? এবার নিয়ে নাও। বদহজমের ধাঁচ? বাচ্চা নিয়ে নাও। কোনো রোগটোগ নেই? বাচ্চা নিয়ে নাও। পশ্চিমবঙ্গ লাটে উঠছে? বাচ্চা নিয়ে নাও... জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে? বাচ্চা নিয়ে নাও। একটা আছে? আর একটা নিয়ে নাও।





আচ্ছা, আপনারা ভেবে দেখেছেন যাদের ক্রমাগত বাচ্চার কথা বলে আপনারা মাথা খারাপ করে দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে কারোর সত্যিই শারীরিক/মানসিক কোনো সমস্যা আছে কিনা? তার মিসক্যারেজের ইতিহাস আছে কিনা, কেউ দিনের পর দিন দুটো রেখা দেখার জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুণছে কিনা, কারোর সঙ্গীর সাথেই সম্পর্ক প্রশ্নচিহ্নের মুখে কিনা, কারোর অর্থনৈতিক কোনো অসুবিধে আছে কিনা, কেউ কেরিয়ারের খুব জরুরি জায়গায় দায়বদ্ধ কিনা, কোনো সামাজিক বা পারিবারিক সমস্যা আছে কিনা? আসলে আমরা এই অসভ্য সমাজে বাঁচতে গিয়ে, এই নির্লজ্জ সময়ের ধারক হতে গিয়ে ভুলেই যাই গেছি আমাদের কাছে যে প্রশ্নটা কৌতুকের, কারোর কাছে তা রক্তপাতের হতে পারে। আমার কাছে যে জিজ্ঞাসা সাধারণ, কারোর কাছে তা বিপর্যয়ের হতে পারে। আমার জন্য যে প্রসঙ্গ নিছক কৌতুহলের, অন্যের কাছে তা অস্বস্তির হতে পারে। সর্বোপরি আমার কাছে যা উপদেশের, কারো কাছে তা সম্পূর্ণ অযাচিত হতে পারে। 



আর সবকিছুর চাইতেও বড় কথাটা এই যে পৃথিবীতে সমস্ত কিছুর একটা প্রস্তুতি থাকে। মাতৃত্ব বা পিতৃত্বের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট পড়াশোনা ও প্রস্তুতি থাকা দরকার। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, বি এ, এম এ- ভাল রেজাল্টের জন্য যেমন একটা অধ্যাবসায় থাকা দরকার, ঠিক তেমনি। একথা বললেই একদল মানুষ রে রে করে বলতে আসবেন, 'এসব ন্যাকামির কথা। আমরা যেন মা বাপ হইনি?' হ্যাঁ হয়েছেন। প্রাকৃতিক ভাবে হয়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হতে হয় বলে হয়েছেন, নিজে বেছে নেননি। ফলত: কখন যে একটা ট্রমা ভর্তি, মেন্টাল হেলথের ধ্বজা ওড়ানো জেনারেশন তৈরী হয়েছে বুঝতেই পারেননি। কখন যে বাচ্চা মানুষ করতে গিয়ে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে সমীকরণ পাল্টে গেছে ধরতেই পারেন নি। কষ্ট পেয়েছেন, বলতে পারেন নি। তা বাদে এখন সময় বদলেছে। 


AI এর যুগে 2Gর প্রযুক্তি চলবে কেন? অতএব র‍্যাগিং মার্কা মানসিকতা থেকে সরে আসুন। 'দ্যাখ কেমন লাগে'র অসুস্থতা থেকে সরে আসুন। কারোর বাচ্চা না থাকলে, বাচ্চা 'হচ্ছেনা' বলা বন্ধ করুন। বাচ্চা হওয়া না হওয়ার ওপর একটি বৈবাহিক সম্পর্কের সাফল্য নির্ভর করেনা। তাছাড়া বাচ্চা নেওয়াটা যেমন একটা নির্বাচন, বাচ্চা না নেওয়াও কোনো দম্পতির নির্বাচন হতেই পারে। তাতে কোনো মহাভারত অশুদ্ধ হয়না বরং গতানুগতিকের বিপরীতে যেতে পারা অন্য এক আধুনিক মননই প্রতিষ্ঠিত হয়। বরং কারোর অত্যন্ত ব্যক্তিগত বিষয়কে ড্রয়িংরুমে, লোকসমক্ষে নিয়ে আসা কুরুচিকর। সে সময় ব্যায় না করে পড়ুন, জানুন। 




হ্যাঁ, বাচ্চা নেবার জন্যেও পড়াশোনা করতে হবে, নিজেদের তৈরী করতে হবে। সচেতনতা আনতে হবে। জরুরী রক্তপরীক্ষাগুলো করে নিতে হবে। জরুরী ওষুধ, সাপ্লিমেন্ট শুরু করতে হবে। ফিজিকাল মেন্টাল এক্সারসাইজ করতে হবে। আমি ভাগ্যবান যে আমার সঙ্গী এ বিষয়ে কারোর কথা শোনেনি বরং সন্তান পরিকল্পনার আগে আমাকে সময় নিতে বলেছে, তৈরী হতে সাহায্য করেছে। আমরা দুজনেই সমস্ত জরুরী রক্তপরীক্ষা করেছি, দুজনে নিয়মিত জিম করেছি, ডায়েট ঠিক করেছি। আমার রক্তাল্পতার ধাঁচ, আয়রন ট্যাবলেট সহ্য হয়না তাই প্রেগনেন্সি প্ল্যানিং এর আগে আয়রন ইনফিউশন নিয়েছি।


 Surajit সবসময় বলেছে বাচ্চা প্ল্যান করার আগে মেয়েদের অনেক বেশি ফিজিকালি স্ট্রং হওয়া দরকার কারণ বাচ্চার জন্ম, ব্রেস্ট ফিডিং, অধিকাংশ সময় কোলে নেওয়া ইত্যাদির জন্য অনেক বেশি ধকল হয়, তার জন্য প্রস্তুতি জরুরী। আমি সে সুযোগ পেয়েছি। মাল্টিভিটামিন, ফলিক এসিড আগে থেকেই শুরু করেছি, সব জায়গা ইভ্যালুয়েট করেছি। দুজনে অনেক ঘুরতে গেছি, সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছি, জরুরী বই পড়েছি, পডকাস্ট শুনেছি, স্ট্রেস ফ্রি থেকেছি... সর্বোপরি লোকের কথায় কান দেওয়া বন্ধ করেছি। আর সেটা পেরেছি দুজনের মধ্যে একটা পারষ্পরিক মিল, মজবুত সম্পর্ক আছে বলে। তাই আপনার থেকে পরামর্শ না চাইলে বিয়ের পরেই যুগলকে বাচ্চা নিতে মাথাখারাপ না করে, দাম্পত্য জীবনে একটা পোক্ত সম্পর্ক যাতে তৈরী হয় সে বিষয়ে জ্ঞান দিন। সুন্দর সময় কাটাতে বলুন। জরুরী পরীক্ষা করে তবেই যাতে সন্তান পরিকল্পনা করা হয়, সে বিষয়ে সতর্ক করুন। আর কিছু পুরুষকে বলছি, স্ত্রী কে এই অসভ্য মানসিকতার প্রতিবেশী পরিজনের কাছে একলা ছেড়ে না দিয়ে পাশে থাকুন। সর্বোপরি পরিবর্তিত অবস্থাকে বোঝার মত, অন্যের সিদ্ধান্তকে সম্মান করার মত, অন্য ভাবনাকেও জায়গা দেবার মত সংবেদনশীল হ'ন।




More related topics


A person who dies from a ten-minute chest pain| দশ মিনিটের বুকে ব্যথায় যিনি মারা যাচ্ছেন





Comments

Popular posts from this blog

A girl was having bangla golpo

  একটি মেয়ের বিবাহিত জীবনে প্রচুর অশান্তি হচ্ছিল সে কোনো ভাবেই |  A girl was having a lot of trouble in her married life English convert scroll 👇 Married life পরিবর্তনের শুরু নিজেকে বদলে দেওয়া থেকেই : তার স্বামীকে মেনে নিতে পারছিল না,মনের মধ্যে এতোটাই রাগ জন্মেছিল যে সে তার স্বামীকে খুন পর্যন্ত করতে চাইছে।  একদিন সকালে সে তার মায়ের কাছে গিয়ে বললো- “আমি আমার স্বামীকে নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি,আমি আর তার বাজে কথা মেনে নিতে পারছি না। আমি তাকে খুন করতে চাই,কিন্তু আমি ভয়‌ পাচ্ছি যে দেশের আইন আমাকে দায়ী করবে। তুমি কি এই বিষয়ে আমাকে সাহায্য করতে পারো মা..??” bangla golpo মা উত্তর দিলেন- “হ্যাঁ, আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি। তবে তার আগে কয়েকটি কাজ আছে যা তোমাকে করতে হবে।” মেয়ে জিজ্ঞাসা করলো- “কি কাজ মা..?? আমি তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যে কোনো কাজ করতে প্রস্তুত আছি।” মা বললেন- “ঠিক আছে, তাহলে শোনো:- ১. তোমাকে প্রথমেই তার সাথে খুব ভালোভাবে শান্তিতে কিছুদিন থাকতে হবে,যাতে সে মারা যাওয়ার পর কেউ তোমাকে সন্দেহ করতে না পারে। ২. তার কাছে সুন্দরী এবং আকর্ষণীয়া দেখাব...

Mandra was sitting bangla golpo

Mandra was sitting quietly in a corner of the hospital's black chair. She suddenly fainted ||হাসপাতালের কালো চেয়ারের এক কোণে চুপচাপ বসেছিল মন্দ্রা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়ায় বেশি কিছু ভাবনা চিন্তা না করেই সে বাবাকে সামনের হাসপাতালে নিয়ে এসেছে| খানিক আগে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারল বাবার মাথায় ক্লট জমেছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশন করাতে হবে| এদিকে দিন আনি দিন খাই পরিবার, তার টিউশনের দু হাজার টাকাও পরিবারের কাছে অনেক| ষাট হাজার টাকা... অঙ্কটা তাদের মতো পরিবারের জন্য অনেক| দিন দুয়েকের মধ্যে তো দূর, বছরখানেকের মধ্যেও জোগাড় করতে পারবে কিনা সন্দেহ! রিসেপশন ডেস্কে বসা গোলাপি ইউনিফর্ম পরা মহিলার কাছ থেকে টাকার অঙ্কটা শোনার পরপরই মন্দ্রার মনে হল মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া বোধহয় একেই বলে| এত টাকা জোগাড় করার সামর্থ্য নেই তার, তবে কি বাবা আর প্রাণে বাঁচবে না? মা কেমন ছিল ভাল করে মনেও নেই তার, অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করতে না পেরে তাকে ফেলে পালিয়েছে| বাবাই খেয়ে না খেয়ে পক্ষী মাতার মতো বুকে আগলে রেখেছিল এতদিন| কিন্তু বাবাই যদি তারাদের দেশে চলে যায়, একলা কিভাবে বাঁচবে মন্দ্রা? কথাটা ...

Pride is terrible bangla golpo

  যার ভালোবাসা গভীর তার অভিমান ভয়ংকর | He whose love is deep his pride is terriblehoop English convert scroll 👇 মানুষকে কখনও একা কাঁদার সময় দিতে নেই জানেন! একবার কেউ একা কাঁদতে শিখে গেলে, তার আর কারও প্রয়োজন হয় না।  -আগে জানতাম না, তবে এখন জানি। মেয়েদের অভিমান ভালোবাসার চেয়েও ভয়ংকর।  -আংশিক ভুল জানেন আপনি।  -সঠিকটা তবে জানিয়ে দিন।  -যার ভালোবাসা যত গভীর, তার অভিমান তত ভয়ংকর।  -আপনি বলছেন যখন, মেনে নিলাম।  -আপনার ভালোবাসতে ইচ্ছে করে না জ্যোতিষ্ক?  -করে তো! কিন্তু জীবনের সাময়িক উদ্দেশ্য পূরণের স্বার্থে এমন কিছু ব্যক্তিগত ক্ষতি হয়ে গেছে, যা আমি চাইলেও ফেরাতে পারব না। আপনার গল্প বলুন ম্যাডাম। যাঁরা ভালোবাসতে জানেন, তাঁদের কাছে ভালোবাসার গল্প শুনতে ভালো লাগে।  -আমি আর কী বলব? যখন মন ভুল পথনির্দেশ দেয়, তখন সঠিক পথে হাঁটার জন্য নিজের মনের বিরুদ্ধে যেতে হয়। আমিও গেছি, এখন একরকম ভালোই আছি।  -সত্যিই ভালো আছেন? কতটা ভালো আছেন? জানতে ইচ্ছে করে।  -ঠিক জানি না। কী পেয়েছি, কতটা হারিয়েছি, সেই হিসেব রাখি না। আজকাল নিজের ভালো থাকার চেয়েও, অন্যের ভাল...