স্কার্ট ছেড়ে সদ্য সালোয়ার তখন আমি তুমি আমার পায়ের|I just left the skirt and put on my salwar You are my feet
বিদ্যে কিন্তু!সুজান মিঠি || But in education!
Suzan Mithi
পাতায় কাগজের টুকরো ছুঁড়লে।
তুলে নিয়ে কপালে ঠেকিয়ে বললাম, বিদ্যে কিন্তু!
পায়ে ঠেকলে পাপ হয়।
তুমি টুক করে হেসে দিলে।
টিফিন শেষের ঘণ্টা পড়ল।
দুজনেই দুজনের ক্লাসে বসলাম।
অমনোযোগী, বাতাস থেকে হাসি লুফে নিচ্ছে হৃদয়।
শিরায় উপশিরায় প্রবাহিত হতে হতে ঠোঁটে এসে ঠেকছে।
দিদিমণি ভীষণ কড়া।
কান ধরে দাঁড় করিয়ে দিলেন।
বুকের মধ্যে ঢেউ বাড়তে বাড়তে ক্লাস টেন, ইলেভেন, টুয়েলভ…
তোমার কলেজ শেষ হল।
চাকরি পেলে।
আমার কোলে মাথা রেখে মাঠের ঘাস ছিঁড়লে।
চিনেবাদামের খোসা উড়িয়ে বললে, আর কতদিন?
আমার বুকের ঢেউ থেমে প্রশ্ন শুনে নিল।
তারপর আমার চোখ হাসল।
বললাম, শক্ত করে বাঁধতে হবে না?
চুলে বিনুনি, চোখে চশমা, সিফনের শাড়ি…
একদিন আমিও দিদিমণির চেয়ারে বসলাম।
আস্কারা দিলাম উড়ন্ত মনদের।
আনমনে হাসলাম।
ঘর বাঁধলাম।
সে ঘরের ছাতের উপর বৃষ্টি পড়ল।
রোদ্দুর নেমে এল।
মেঝের উপর গড়াগড়ি খেল বাতাস।
কানে কানে বলে গেল, আমি কিন্তু আয়ু নিয়ে এসেছি। যত ইচ্ছে তুলে নাও।
আমি তোমার বুকে মাথা রেখে গুনলাম,
বাইশ, পঁচিশ, পঞ্চাশ, সত্তর…
এই দেখ, ভুলেই গেছি!
মধ্যে দুটো ফুল ফুটল তো!
বাগান বুনেছিলাম যে!
সে ফুল ফুটেই হাসল।
হাসতে হাসতে ভালোবাসল।
ভালোবাসতে বাসতে ভেসে গেল…
তাদের সৌরভ গিয়ে পৌঁছাল পশ্চিমে।
সে ফুলেরা নিয়ম করে টেলিফোনে গন্ধ পাঠায়,
খেয়েছ তো? ভালো আছো তো?
ভালো আছি।
কতবার যে মেঘ করেছে! ঘিরে ধরেছে আমার এলোচুল! তোমার চোখে অন্ধকার নেমে এসেছে!
আমি কেঁদেছি। তুমিও আবডালে ভিজে মাটি হয়েছ, তারপর উঠে এসে হাত ধরে বলেছ
মেঘের পরেই তো সূর্য থাকে!
তাও মেঘ দেখলেই অমন ভয় কেন পাই বলো তো দুজন?
বাতাস আবার আসে। মেঝের উপর হামাগুড়ি দিতে দিতে বলে, বয়স বাড়ছে রে মেয়ে!
আয়ু তো কমবেই রে!
বাতাস চলে যেতেই তোমার মুখে হাসি।
কোঁকড়ানো ত্বকে ফাল্গুন যেন!
আর একবার স্কার্ট পরবে?
দেখো দিকি কাণ্ড! অবেলায় কেমন আবদার!
আর কি সেই ফর্সা নিটোল পা আছে? যে কাগজ ছুঁড়ে লিখবে ভালবাসি…
আমি বলব, বিদ্যে পায়ে লাগলে পাপ হবে কিন্তু!
তুমি বললে, আমি বেশ মূর্তি গড়তে পারি, দেখবে?
আচ্ছা দেখাও। বসলাম আমি।
বাতাস কাঁপতে কাঁপতে এল। বড় দূর্বল!
আয়ু ফুরিয়েছে সেই কবে…
আমি কাঁদলাম। হোক দূর্বল! তবু কিছুতেই আমি
ওকে যেতে দেব না!
তুমি মূর্তি গড়লে। নিটোল পা আমার।
কাগজের টুকরোয় লিখলে, ভালবাসি…
আমি তোমার কাগজ তুলে নিয়ে কপালে ঠেকালাম। বললাম, বিদ্যে কিন্তু…!
আমার দুই ফুলের ফোন পশ্চিম থেকে পূর্বে বেজেই চলল…
দেখেছ, ভালবাসতে বাসতে কবে যে দুজনেই মরে গেছি বুঝতেই পারিনি!
Next page click

Comments
Post a Comment