পুরুষকে পোষা কুকুর ভেবেছেন? — রূপ আর অহংকার আপনাকে ডুবাবে | Do you think of men as pets? — Beauty and arrogance will drown you
সচেতনতা, সম্পর্ক ও পরিবর্তন: কেন রূপ-অহংকারে সংসার শেষ হয় এবং সত্যিকারের বন্ধন গঠনের উপায়
আপনি কি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের রূপ দেখেন এবং ভাবেন—এই রূপে সবাই ছেয়ে যাবে? আপনি কি মনে করেন স্বামী আপনার কেনা ‘গোলাম’, যাকে ইচ্ছেমতো ধমক দিয়ে, শাসন করে হাতের মুঠোয় রাখবেন? যদি আপনার উত্তর হ্যাঁ—তাহলে এই লেখা আপনার জন্য সতর্কবার্তা। কারণ অনেক নারী অজান্তেই তাদের সুখের সংসারে আগুন লাগাচ্ছেন; রূপ-অহংকারে নিজেরাই নিজেকে ধংস করছেন।
রূপ, অহংকার ও সম্পর্ক: কি করে বাধা দেয় রূপ?
কিছু নারী ভাবেন পুরুষকে কন্ট্রোল করাই স্মার্টনেস; কথায় কথায় অপমান, পরিবারকে ছোট করে বলা—এগুলোই ক্ষমতা। তারা মনে করেন স্বামীকে ধমক, চোখের জল দিয়ে ব্ল্যাকমেইল বা শারীরিক আবেদনই জীবনজুড়ে ধরে রাখবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন: পুরুষ কোনো জড়বস্তু নয়, কোনো পোষা প্রাণী নয়—যাকে শিকল পরিয়ে রাখা যায়। যদি কেউ বাঁধা পড়ে, সেটা হয় মায়া, সম্মান ও যত্নের জালে; রাগ-অহংকারে নয়।
রূপ দিয়ে মানুষ আকর্ষিত হয় এক সময়—কিন্তু সে সম্পর্ককে টেকসই করে না। শরীরী আবেদন এক রাতের নেশা হয়ে যেতে পারে, কিন্তু আত্মিক বন্ধন—ভালোবাসা, বিশ্বাস, স্নেহ—টাই দীর্ঘস্থায়ী। রূপই যদি সম্পর্কের একমাত্র ভিত্তি হয়, সত্যি সময় এলে তা ভেঙে পড়ে।
বিখ্যাত উদাহরণ—রূপের চক্রবিলে ব্যর্থ করা সম্পর্ক
বিশ্বজোড়া সুন্দরী, প্রতিভা বা ধনী নারীরাও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে—মেরিলিন মনরো, এলিজাবেথ টেইলর, ম্যাডোনা, কিম কার্দাশিয়ান থেকে আমাদের দেশেরও অনেক নামকরা মুখ। এদের সৌন্দর্য, ক্ষমতা কিংবা অর্থ কোনো দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা দিতে পারেনি। কারণ সম্পর্ক চায় মমতা, বোঝাপড়া, নিরাপত্তা—শুধু সৌন্দর্য নয়।
পুরুষের মন: বয়সের সঙ্গে চাহিদা বদলায়
পুরুষের চাওয়া তার বয়স অনুযায়ী বদলাতে থাকে। এই পরিবর্তনটি বুঝতে পারলেই সম্পর্ক টেকবে।
২০–৩০ বছর: এই সময়ে পুরুষ শুধু সৌন্দর্য নয়—চায় বিশ্বস্ত সঙ্গী, বন্ধু, যার সঙ্গে সে স্বপ্ন ভাগ করবে; যাকে সে সম্মান পাবে। More articale
৩০–৪০ বছর: ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ, পরিবার—চাপ বাড়ে। তখন সে ঘরে শান্তি, স্নেহ ও সমর্থন খোঁজে।
৪০–৫০ বছর: রূপ আর আগ্রহ কমে—সে চায় নির্ভরযোগ্যতা, মমতা, সেই একই রকম আত্মিক নিরাপত্তা যা তার মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিল।
একজন পুরুষ তার স্ত্রীর মধ্যে দুইটি রূপ খোঁজে — দিনের বেলায় “মা”র স্নেহ (যত্ন, যত্ন, ঘরের শান্তি), আর রাতে “প্রেমিকা”র আকর্ষণ। যারা এই দুই রূপের ভারসাম্য রাখতে পারে, তাদের সঙ্গী দফা করে অন্যদিকে তাকাবে না।
অত্যাচার ও ছোট করা: সম্পর্কের ক্ষতিকর আচরণ
স্বামীকে ছোট করা, বন্ধুদের সামনে অপমান করা, শাশুড়ি-শ্বশুরের নামে অনবরত অভিযোগ—এসব আচরণ বাড়িকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করে। একজন পুরুষ যখন ঘরে শান্তি খুঁজে পেতে চাই—তার আগে যদি প্রতিদিন মানসিক আঘাত পায়, সে কোথাও শান্তি খোঁজার চেষ্টা করবে। আর যখন সে বাইরে শান্তি পেতে পারবে, সেটাই তার কাছে বড় হয়ে উঠবে—কথায় কথায় মাথা নত করার মানুষ না। তখন দোষারোপ করার আগে ভাবতে হবে—আপনি কি খুঁজে পেয়েছেন মায়ের মতো স্নেহ, না করে দিয়েছেন নতুন তুলনাহীন যুদ্ধক্ষেত্র?
রূপকে কাজে লাগান, অহংকারকে নয়
রূপ থাকা খারাপ নয়—রূপে আত্মবিশ্বাস পাওয়া সুন্দর। কিন্তু রূপকে শক্তি হিসেবে ধরে রাখতে চাইলে সেটাকে যত্ন, নম্রতা, সম্মান আর বোঝাপড়ার সঙ্গে মিলিয়ে দিন। রূপ মানুষের আকর্ষণ বাড়ায়; কিন্তু সম্মান ও মমতা তাকে ধরে রাখে। তাই নিজের রূপকে অহংকারের অস্ত্রে পরিণত করে কাউকে ছোট করা দূরে রাখুন।story
সম্পর্ক মেরামতের উপায়: সহজ কিন্তু কঠিন বাস্তব ধাপগুলি
শ্রদ্ধা শেখা: কথায়-কর্মে আপনার সঙ্গীর প্রতি সম্মান দেখান। ছোট করে বললে, বন্ধুত্ব এবং আত্মসম্মান খোয়াবে।
শোনার অভ্যাস গড়ুন: কথা শুনুন—কী চায়, কী কষ্টে আছে—এটা জিজ্ঞাসা করুন না, শুনুন।
মায়ের মত যত্ন: ছোট ছোট কাজ—রান্না, কাপড়-জিনিস দেখাশোনা, অসুস্থ হলে সেবা—এসব পুরুষকে মনের মিল দেয়।
রাতের ‘প্রেমিকা’ থাকুন: আবেগ, আবেদন, মজা, আকর্ষণ—রোমান্সকে জীবন্ত রাখুন।
অহংকার ছেঁটে ফেলুন: কাউকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা বন্ধ করুন—বাস্তব সঙ্গীতা কন্ট্রোলেই থাকে না, সম্মানেই থাকে।
সময়ের সাথে নিজেকে বদলান: বয়স পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিন—রূপ যদি তার ঝলক কমে, আপনার হৃদয়ের গভীরতা বাড়ুক।
উপসংহার: আয়নার সামনে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন
আজ রাতে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন—“আমি কি আমার স্বামীর রানী নাকি তার জীবনের বোঝা?” যদি উত্তর ভয়ানক মনে হয়, তবে এখনই বদলানো সম্ভব। সময়কে হাতছাড়া করলে ফল করুণ। রূপ আছে—ভালো। কিন্তু রূপের সঙ্গে নম্রতা, সম্মান ও মমতা না থাকলে সম্পর্ক টিকে থাকবে না।
পুরুষকে শিকল পরিয়ে রাখা যায় না; তাকে মায়া, শ্রদ্ধা ও স্নেহ দিয়ে বেঁধে রাখা যায়। আপনার রূপ যদি সম্পর্ককে সিঁদুরে পরিণত করে—উৎসব হবে; কিন্তু যদি তা অহংকারে বদলে যায়—তবে একদিন আপনি একা পাবেন, এবং সেই হাসি আর চোখের জ্বলন আপনাকে রক্ষা করবে না। বদলানোর সাহস রাখুন—তারাই সবচেয়ে শক্তিশালী, যাঁরা নিজেকে বদলে ভালোবাসাকে রাখে।
More article
World most beautiful face world record



Comments
Post a Comment