Skip to main content

How many ships are lost in the world every year The unknown stories of the huge ships lost in the mysteries of the sea

পৃথিবীতে প্রতি বছর কতগুলো জাহাজ হারিয়ে যায় সমুদ্রের রহস্যে হারিয়ে যাওয়া বিশাল জাহাজগুলোর অজানা কাহিনি | How many ships are lost in the world every year The unknown stories of the huge ships lost in the mysteries of the sea






পৃথিবীর প্রায় ৭০ শতাংশ অংশই জল দ্বারা আচ্ছাদিত। এই বিশাল নীল সমুদ্রের বুকে প্রতিদিন লাখ লাখ জাহাজ চলাচল করে — বাণিজ্যিক মালবাহী জাহাজ, যাত্রীবাহী জাহাজ, তেলবাহী ট্যাঙ্কার, মাছ ধরার ট্রলার কিংবা গবেষণা জাহাজ। বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ১০ লক্ষাধিক সক্রিয় জাহাজ নিবন্ধিত আছে। কিন্তু আপনি কি জানেন, প্রতি সপ্তাহেই গড়ে পৃথিবীর কোথাও না কোথাও একটি জাহাজ চিরতরে হারিয়ে যায়?


হ্যাঁ, শুনে অবাক লাগলেও এটি সত্যি। উন্নত প্রযুক্তি, জিপিএস ট্র্যাকিং, স্যাটেলাইট যোগাযোগ থাকা সত্ত্বেও এখনও এমন ঘটনা ঘটে যায়। এই হারিয়ে যাওয়া জাহাজগুলোর কিছু হয়তো ঝড়ের কবলে পড়ে, কিছু ডাকাতদের আক্রমণে নিখোঁজ, আবার কিছু Home রহস্যময়ভাবে কখনও আর খুঁজে পাওয়া যায় না।




 বিশ্বে প্রতি বছর কত জাহাজ হারায়?


বিভিন্ন সামুদ্রিক নিরাপত্তা সংস্থা ও বীমা কোম্পানির তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর গড়ে ৫০ থেকে ৭০টি বড় জাহাজ সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে যায় বা ধ্বংস হয়।

তাছাড়া ছোট আকারের নৌযান বা মাছ ধরার ট্রলারসহ এ সংখ্যা ৩,০০০-এরও বেশি।


এর মধ্যে কিছু জাহাজ দুর্ঘটনার পর উদ্ধার করা যায়, আবার অনেকগুলো চিরতরে হারিয়ে যায় সমুদ্রের অতল গহ্বরে। বিশাল আকারের কার্গো জাহাজ কিংবা ট্যাঙ্কার ডুবে গেলে পরিবেশগত ক্ষতির পাশাপাশি লাখ লাখ ডলারের ক্ষতি হয়।




জাহাজ হারিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণসমূহ


জাহাজ নিখোঁজ বা ডুবে যাওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। নিচে প্রধান কিছু কারণ তুলে ধরা হলো:


প্রবল সামুদ্রিক ঝড় বা টাইফুন


সমুদ্রের সবচেয়ে বড় বিপদ হলো ঝড়। বিশেষ করে প্রশান্ত মহাসাগর, ভারত মহাসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় প্রায়ই দেখা যায়। এই ঝড়ের তীব্রতা এতটাই বেশি হয় যে বিশাল জাহাজও মুহূর্তেই ভারসাম্য হারিয়ে উল্টে যায়।


ডাকাতদের আক্রমণ (Piracy)


সোমালিয়া, পশ্চিম আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু অংশে এখনও সমুদ্র ডাকাতদের দৌরাত্ম্য রয়েছে। তারা জাহাজে চড়াও হয়ে মালামাল লুট করে, কখনও জাহাজটিকেই দখল করে নেয়। অনেক সময় এসব জাহাজকে পরে আর খুঁজে পাওয়া যায় না।


 ইঞ্জিন বা যান্ত্রিক ত্রুটি


জাহাজের ইঞ্জিন, জেনারেটর, ন্যাভিগেশন সিস্টেমে ত্রুটি দেখা দিলে মাঝ সমুদ্রে সেটি অসহায় হয়ে পড়ে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে সেটি তীব্র ঢেউ বা ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যেতে পারে।


 মানবীয় ভুল (Human Error)


গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৭৫ শতাংশ জাহাজ দুর্ঘটনার পেছনে মানবীয় ভুল দায়ী। ভুল নেভিগেশন, অতিরিক্ত গতি, রাডার নির্দেশনা উপেক্ষা করা, কিংবা অতিরিক্ত ওজন বহন করা—এসবই দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


রহস্যময় অঞ্চল যেমন বারমুডা ট্রায়াঙ্গল


বারমুডা ট্রায়াঙ্গল নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে। আটলান্টিক মহাসাগরের এই অঞ্চলে বহু জাহাজ ও বিমান নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যদিও এর পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এখনো স্পষ্ট নয়, তবু এটি আজও রহস্যের এক অমীমাংসিত অধ্যায়।


🚢 টাইটানিক — বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত জাহাজ দুর্ঘটনা


১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বন্দর থেকে আমেরিকার নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল যাত্রীবাহী জাহাজ RMS Titanic। এটি ছিল মানব ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ ও আধুনিক জাহাজ, যেটিকে "অডুবনীয়" বলা হতো।


কিন্তু ১৫ এপ্রিল, ১৯১২ সালের রাতে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে টাইটানিক মাত্র আড়াই ঘণ্টায় ডুবে যায়। এতে ২,২০০ যাত্রীর মধ্যে প্রায় ১,৫০০ জন প্রাণ হারান।


এই দুর্ঘটনা ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সামুদ্রিক ট্র্যাজেডির একটি। পরে গবেষণায় জানা যায়, বরফখণ্ডের সতর্ক সংকেত উপেক্ষা করা, পর্যাপ্ত লাইফবোট না থাকা এবং তৎকালীন প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতাই এর প্রধান কারণ।




টাইটানিকের চেয়েও ভয়াবহ জাহাজ দুর্ঘটনাগুলো


যদিও টাইটানিক বিখ্যাত, তবে এর চেয়েও ভয়াবহ কিছু জাহাজ দুর্ঘটনা ইতিহাসে ঘটেছে।

 ১. MV Doña Paz (ফিলিপাইন, ১৯৮৭)


এটি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জাহাজ দুর্ঘটনা। একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কারের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪,৩৮৬ জন মারা যায়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী ও নিরাপত্তার ঘাটতি ছিল এর মূল কারণ।


২. MV Wilhelm Gustloff (১৯৪৫)


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মান জাহাজটি সোভিয়েত সাবমেরিনের আক্রমণে ডুবে যায়। এতে প্রায় ৯,০০০ মানুষ মারা যান।


৩. SS Kiangya (চীন, ১৯৪৮)


চীনের উপকূলে মাইন বিস্ফোরণে জাহাজটি ডুবে যায়, মৃত্যু হয় প্রায় ৩,৯০০ মানুষের। এটি ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ বেসামরিক জাহাজ দুর্ঘটনা।


?আধুনিক প্রযুক্তিতে জাহাজ নিরাপত্তা কতটা বেড়েছে?


বর্তমান যুগে জাহাজে রয়েছে স্যাটেলাইট জিপিএস, অটো নেভিগেশন, সোনার সিস্টেম, আবহাওয়া পূর্বাভাস ব্যবস্থা—যার মাধ্যমে জাহাজগুলো বিপদ শনাক্ত করে আগেই রুট পরিবর্তন করতে পারে।

তবুও প্রতিবছর কিছু দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। অনেক সময় প্রযুক্তি বিকল হয়ে যায়, কখনও মানুষ ঝুঁকি নেয় ভুল সিদ্ধান্তে।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০০০ সালের পর থেকে জাহাজ দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ।

তবুও সমুদ্রের শক্তি ও প্রকৃতির অনিশ্চয়তা এখনো মানুষের নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি আসেনি।


হারিয়ে যাওয়া জাহাজ ও মানব সভ্যতার শিক্ষা


প্রতিটি হারিয়ে যাওয়া জাহাজ একটি গল্প। কখনও সেটি সাহসের, কখনও ভুলের, কখনও প্রকৃতির অজেয় শক্তির প্রতীক।

মানুষ প্রযুক্তিতে যতই এগোক না কেন, সমুদ্র আজও তার নিজস্ব রহস্যে আচ্ছাদিত।


যে সমুদ্র আমাদের জীবিকা, বাণিজ্য ও ভ্রমণের সুযোগ দেয়, সেই সমুদ্রই মুহূর্তে গিলে নিতে পারে বিশাল এক স্টিলের দানবকেও। তাই প্রতিটি জাহাজ দুর্ঘটনা শুধু ক্ষতির খবর নয়, বরং এটি মানব সভ্যতার সামনে প্রকৃতির প্রতি বিনয় ও সতর্কতার বার্তা।


শেষ কথা


প্রতি বছর কয়েক ডজন জাহাজ হারিয়ে যায়, কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।

তবুও মানুষ সমুদ্র জয় করতে চায়, অজানার দিকে এগিয়ে যেতে চায়।

সমুদ্র যতই ভয়ংকর হোক না কেন, সেটিই মানব সভ্যতার বাণিজ্য, আবিষ্কার ও যোগাযোগের সবচেয়ে বড় মাধ্যম।


যেমন টাইটানিক ডুবেছিল, তবুও সমুদ্রযাত্রা থেমে যায়নি — কারণ মানুষ হার মানে না, বরং প্রতিটি দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও নিরাপদ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলে।




More related story



চিতার ভস্মে লেখা মুক্তির ইতিহাস ৯৪ সংখ্যার পেছনের আধ্যাত্মিক রহস্য | The history of liberation written in the ashes of the pyre 






Comments

Popular posts from this blog

A girl was having bangla golpo

  একটি মেয়ের বিবাহিত জীবনে প্রচুর অশান্তি হচ্ছিল সে কোনো ভাবেই |  A girl was having a lot of trouble in her married life English convert scroll 👇 Married life পরিবর্তনের শুরু নিজেকে বদলে দেওয়া থেকেই : তার স্বামীকে মেনে নিতে পারছিল না,মনের মধ্যে এতোটাই রাগ জন্মেছিল যে সে তার স্বামীকে খুন পর্যন্ত করতে চাইছে।  একদিন সকালে সে তার মায়ের কাছে গিয়ে বললো- “আমি আমার স্বামীকে নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি,আমি আর তার বাজে কথা মেনে নিতে পারছি না। আমি তাকে খুন করতে চাই,কিন্তু আমি ভয়‌ পাচ্ছি যে দেশের আইন আমাকে দায়ী করবে। তুমি কি এই বিষয়ে আমাকে সাহায্য করতে পারো মা..??” bangla golpo মা উত্তর দিলেন- “হ্যাঁ, আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি। তবে তার আগে কয়েকটি কাজ আছে যা তোমাকে করতে হবে।” মেয়ে জিজ্ঞাসা করলো- “কি কাজ মা..?? আমি তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যে কোনো কাজ করতে প্রস্তুত আছি।” মা বললেন- “ঠিক আছে, তাহলে শোনো:- ১. তোমাকে প্রথমেই তার সাথে খুব ভালোভাবে শান্তিতে কিছুদিন থাকতে হবে,যাতে সে মারা যাওয়ার পর কেউ তোমাকে সন্দেহ করতে না পারে। ২. তার কাছে সুন্দরী এবং আকর্ষণীয়া দেখাব...

Mandra was sitting bangla golpo

Mandra was sitting quietly in a corner of the hospital's black chair. She suddenly fainted ||হাসপাতালের কালো চেয়ারের এক কোণে চুপচাপ বসেছিল মন্দ্রা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়ায় বেশি কিছু ভাবনা চিন্তা না করেই সে বাবাকে সামনের হাসপাতালে নিয়ে এসেছে| খানিক আগে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারল বাবার মাথায় ক্লট জমেছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশন করাতে হবে| এদিকে দিন আনি দিন খাই পরিবার, তার টিউশনের দু হাজার টাকাও পরিবারের কাছে অনেক| ষাট হাজার টাকা... অঙ্কটা তাদের মতো পরিবারের জন্য অনেক| দিন দুয়েকের মধ্যে তো দূর, বছরখানেকের মধ্যেও জোগাড় করতে পারবে কিনা সন্দেহ! রিসেপশন ডেস্কে বসা গোলাপি ইউনিফর্ম পরা মহিলার কাছ থেকে টাকার অঙ্কটা শোনার পরপরই মন্দ্রার মনে হল মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া বোধহয় একেই বলে| এত টাকা জোগাড় করার সামর্থ্য নেই তার, তবে কি বাবা আর প্রাণে বাঁচবে না? মা কেমন ছিল ভাল করে মনেও নেই তার, অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করতে না পেরে তাকে ফেলে পালিয়েছে| বাবাই খেয়ে না খেয়ে পক্ষী মাতার মতো বুকে আগলে রেখেছিল এতদিন| কিন্তু বাবাই যদি তারাদের দেশে চলে যায়, একলা কিভাবে বাঁচবে মন্দ্রা? কথাটা ...

Pride is terrible bangla golpo

  যার ভালোবাসা গভীর তার অভিমান ভয়ংকর | He whose love is deep his pride is terriblehoop English convert scroll 👇 মানুষকে কখনও একা কাঁদার সময় দিতে নেই জানেন! একবার কেউ একা কাঁদতে শিখে গেলে, তার আর কারও প্রয়োজন হয় না।  -আগে জানতাম না, তবে এখন জানি। মেয়েদের অভিমান ভালোবাসার চেয়েও ভয়ংকর।  -আংশিক ভুল জানেন আপনি।  -সঠিকটা তবে জানিয়ে দিন।  -যার ভালোবাসা যত গভীর, তার অভিমান তত ভয়ংকর।  -আপনি বলছেন যখন, মেনে নিলাম।  -আপনার ভালোবাসতে ইচ্ছে করে না জ্যোতিষ্ক?  -করে তো! কিন্তু জীবনের সাময়িক উদ্দেশ্য পূরণের স্বার্থে এমন কিছু ব্যক্তিগত ক্ষতি হয়ে গেছে, যা আমি চাইলেও ফেরাতে পারব না। আপনার গল্প বলুন ম্যাডাম। যাঁরা ভালোবাসতে জানেন, তাঁদের কাছে ভালোবাসার গল্প শুনতে ভালো লাগে।  -আমি আর কী বলব? যখন মন ভুল পথনির্দেশ দেয়, তখন সঠিক পথে হাঁটার জন্য নিজের মনের বিরুদ্ধে যেতে হয়। আমিও গেছি, এখন একরকম ভালোই আছি।  -সত্যিই ভালো আছেন? কতটা ভালো আছেন? জানতে ইচ্ছে করে।  -ঠিক জানি না। কী পেয়েছি, কতটা হারিয়েছি, সেই হিসেব রাখি না। আজকাল নিজের ভালো থাকার চেয়েও, অন্যের ভাল...