Skip to main content

What is a successful life Philosophy of life in the story of the kite

 সফল জীবন কাকে বলে ঘুড়ির গল্পে জীবনদর্শন | What is a successful life Philosophy of life in the story of the kite





বন্ধনই সফলতার ভিত্তি

গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর ছেলেরা সাধারণত ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা স্বপ্ন আঁকে। বড় চাকরি, নিজস্ব গাড়ি, স্বাধীন জীবন কিংবা নিজের মতো করে বাঁচার জেদ—এসবই তাদের মনে দোলা দেয়। জীবনের এই সন্ধিক্ষণে তারা জানতে চায়, সফলতা আসলে কাকে বলে। ঠিক তেমনই একদিন কলেজ শেষ করে এক তরুণ তার বাবাকে প্রশ্ন করল, সফল জীবন কাকে বলে। প্রথমে বাবা হাসলেন। তারপর এমন একটি উদাহরণ দিলেন, যা তার ছেলের জীবনের জন্য হয়ে উঠল পথপ্রদর্শক।


সেই দুপুরে বাবা ছেলে দুজন মাঠে গেলেন। সেখানে কিছু শিশুরা ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল। বাবা এক শিশুর কাছ থেকে একটি ঘুড়ি চাইলেন। ছেলে ভাবল, বাবা নিশ্চয়ই তাকে আনন্দ দেওয়ার জন্য এমন করছেন। কিন্তু বাবা জানতেন, এই ঘুড়ির মাঝেই আছে তার ছেলের প্রশ্নের উত্তর।


ঘুড়িটি আকাশে উঠে গেল। বাতাসের টানে আরও আরও ওপরে উঠতে লাগল। ছেলে উৎসুক হয়ে দেখছিল। কিছুক্ষণ পর বাবা বললেন, দেখো তো, ঘুড়িটা এত উঁচুতে ভেসে আছে। তোমার কি মনে হয় না, এই সুতার কারণেই ঘুড়ি আরও উপরে যেতে পারছে না? ছেলে দ্রুত উত্তর দিল, ঠিকই বলেছেন, সুতা না থাকলে ঘুড়ি আরও ওপরে উঠত। বাবা কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তারপর সুতাটা কেটে দিলেন।


প্রথমে ঘুড়ি টানহীন মুক্ত বাতাস পেয়ে আরও উপরে উঠল। ছেলের চোখ আনন্দে চকচক করে উঠল। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ঘুড়িটি নামতে শুরু করল। তার দিকহীন উড়ান ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলল। পড়তে পড়তে দূরের গাছপালার আড়ালে মিলিয়ে গেল। ছেলের চোখে এবার বিস্ময় ও হতাশা।


বাবা বললেন, জীবনে আমরাও ঠিক এমনই ভাবি যে কোনো কোনো বাঁধন আমাদের সাফল্যের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। পরিবার, বাবা-মা, দায়িত্ব, শৃঙ্খলা—এসব আমাদের সুতার মতোই টেনে ধরছে বলে মনে হয়। মনে হয়, সব ছিঁড়ে ফেলতে পারলে আমরা আরও বড় কিছু করতে পারব। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ আলাদা। যে সুতা ঘুড়িকে আটকে রাখে বলে মনে হয়, সেই সুতাই তাকে আকাশে ধরে রাখে, স্থিরতা দেয়, ভারসাম্য রক্ষা করে। সুতা না থাকলে ঘুড়ি কেবল নিচের দিকেই পড়তে থাকে, ঠিক যেমন আমরা পড়ে যাই যখন জীবনের দায়িত্ব থেকে পালাতে চাই।


বাবা স্নেহভরে ছেলের কাঁধে হাত রেখে বললেন, বন্ধন মানেই শৃঙ্খল নয়। বন্ধন আসলে দায়িত্ব, ভালোবাসা, সম্পর্ক, মূল্যবোধ—যা আমাদেরকে শক্তি দেয়। যখন তুমি মনে করো পরিবার তোমাকে পিছিয়ে দিচ্ছে, তখন ভাববে, এই পরিবারই তোমার নিরাপদ আশ্রয়। যখন মনে হয় নিয়ম-কানুন তোমাকে আটকে রাখছে, তখন বোঝার চেষ্টা করবে, এই শৃঙ্খলাই তোমাকে ভুল পথে যেতে বাধা দিচ্ছে। বন্ধুদের ভালোবাসা, সহপাঠীদের সহযোগিতা, শিক্ষকদের উপদেশ, সহযোদ্ধাদের বিশ্বাস—এসবই সুতো। এগুলো ছিঁড়ে গেলে হয়তো শুরুতে স্বাধীন মনে হবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পতন অনিবার্য।


জীবন আসলে একটি ঘুড়ি। আর সেই ঘুড়ির ভারসাম্য ধরে রাখে দুই শক্তি—স্বপ্ন এবং দায়িত্ব। স্বপ্ন আমাদের আকাশে তোলে, দায়িত্ব আমাদের মাটির টানে টিকিয়ে রাখে। এই দুইয়ের মিলনেই সফলতা।



দায়িত্ববান হওয়া সফলতার অন্যতম চাবিকাঠি


মানুষের সাফল্য একদিনে আসে না। পরিকল্পনা, পরিশ্রম, আত্মনিয়ন্ত্রণ—সব মিলেই সাফল্যের পথ গড়ে ওঠে। বাবা-মা, পরিবার বা সমাজের শাসন ও ভালোবাসা আমাদের মাঝে এইসব গুণ তৈরি করে। যে ব্যক্তি নিজের পরিবারকে উপেক্ষা করে কেবল ব্যক্তিস্বার্থে ছুটে চলে, সে শেষ পর্যন্ত শূন্য হয়। কারণ সাফল্য শুধু উচ্চতায় নয়, ভিত্তির শক্তিতেও নির্ধারিত হয়।



সম্পর্কই মানুষের প্রকৃত শক্তি


বাবা আরও বললেন, সব বন্ধনই মানুষকে আটকে রাখার জন্য নয়। কিছু বন্ধন আমাদের রক্ষা করার জন্য। যেমন একজন বন্ধু তোমাকে ভুলের সময় থামিয়ে দেয়, যেমন মা তোমার দুর্বলতার সময় পাশে দাঁড়ায়, যেমন বাবা তোমার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় রাত জাগেন। এসব সম্পর্কই জীবনের অসহায় মুহূর্তগুলোতে হাত ধরে দাঁড়ায়। তাই এই বন্ধনগুলোর মূল্য বোঝা দরকার।


স্বাধীনতা মানে দায়িত্ব থেকে মুক্তি নয়


অনেকের ধারণা, স্বাধীনতা মানেই বন্ধনমুক্ত জীবন। কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা হল নিজের দায়িত্ব নিজে পালন করার ক্ষমতা। যে মানুষ নিজের পরিবারকে সম্মান দেয়, সমাজকে মূল্য দেয়, কাজকে ভালোবাসে, তিনিই প্রকৃত অর্থে স্বাধীন। কারণ সে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখে এবং অন্যরাও তার ওপর নির্ভর করতে পারে।


সাফল্যের সংজ্ঞা


বাবা ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন, সফল জীবন মানে শুধু উচ্চতায় ওঠা নয়। সফলতা মানে সেই উচ্চতায় স্থিরভাবে টিকে থাকা। যেমন ঘুড়ি আকাশে থাকে সুতা ধরে। তেমনি মানুষও সমাজের প্রতি কর্তব্য, পরিবারের প্রতি ভালোবাসা এবং নিজের প্রতি সততার মাধ্যমে সফলতার শিখরে টিকে থাকতে পারে। সুতরাং বন্ধন ছিঁড়তে নয়, বন্ধনকে বুঝতে শিখো। যে সম্পর্ক, যে কর্তব্য, যে শেখানো—সব তোমার সিঁড়ি।


অবশেষে বাবা বললেন, যদি সত্যিই সফল হতে চাও, তবে কখনোই সেই সুতা ছিঁড়ো না যা তোমাকে ভারসাম্য দেয়। কারণ সাফল্য মানে শুধু আকাশ ছোঁয়া নয়, নিজের শেকড় না হারিয়ে ওপরে উঠতে পারা। যে মানুষ আপনজনদের সঙ্গে, নিজের মূল্যবোধ ধরে রেখে, দায়িত্ব পালন করে জীবন পাড়ি দেয়, তার চেয়ে সফল আর কে হতে পারে।



আলেকজান্দ্রিয়া ফিডিং বোতল এক ভুল আবিষ্কারের মরণফাঁদ  | The Alexandria Feeding Bottle is a death trap of a mistaken discovery



হেমেন্দ্র মোহন বসু এক বিস্মৃত নবজাগরণের নায়ক | Hemendra Mohan Bose is a forgotten hero of the Renaissance


কলকাতা ইতিহাস, সংস্কৃতি, পরিবহন ও দুর্গাপূজোর শহর | Kolkata History and Culture Full Guide





Comments

Popular posts from this blog

A girl was having bangla golpo

  একটি মেয়ের বিবাহিত জীবনে প্রচুর অশান্তি হচ্ছিল সে কোনো ভাবেই |  A girl was having a lot of trouble in her married life English convert scroll 👇 Married life পরিবর্তনের শুরু নিজেকে বদলে দেওয়া থেকেই : তার স্বামীকে মেনে নিতে পারছিল না,মনের মধ্যে এতোটাই রাগ জন্মেছিল যে সে তার স্বামীকে খুন পর্যন্ত করতে চাইছে।  একদিন সকালে সে তার মায়ের কাছে গিয়ে বললো- “আমি আমার স্বামীকে নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি,আমি আর তার বাজে কথা মেনে নিতে পারছি না। আমি তাকে খুন করতে চাই,কিন্তু আমি ভয়‌ পাচ্ছি যে দেশের আইন আমাকে দায়ী করবে। তুমি কি এই বিষয়ে আমাকে সাহায্য করতে পারো মা..??” bangla golpo মা উত্তর দিলেন- “হ্যাঁ, আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি। তবে তার আগে কয়েকটি কাজ আছে যা তোমাকে করতে হবে।” মেয়ে জিজ্ঞাসা করলো- “কি কাজ মা..?? আমি তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যে কোনো কাজ করতে প্রস্তুত আছি।” মা বললেন- “ঠিক আছে, তাহলে শোনো:- ১. তোমাকে প্রথমেই তার সাথে খুব ভালোভাবে শান্তিতে কিছুদিন থাকতে হবে,যাতে সে মারা যাওয়ার পর কেউ তোমাকে সন্দেহ করতে না পারে। ২. তার কাছে সুন্দরী এবং আকর্ষণীয়া দেখাব...

Mandra was sitting bangla golpo

Mandra was sitting quietly in a corner of the hospital's black chair. She suddenly fainted ||হাসপাতালের কালো চেয়ারের এক কোণে চুপচাপ বসেছিল মন্দ্রা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়ায় বেশি কিছু ভাবনা চিন্তা না করেই সে বাবাকে সামনের হাসপাতালে নিয়ে এসেছে| খানিক আগে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারল বাবার মাথায় ক্লট জমেছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশন করাতে হবে| এদিকে দিন আনি দিন খাই পরিবার, তার টিউশনের দু হাজার টাকাও পরিবারের কাছে অনেক| ষাট হাজার টাকা... অঙ্কটা তাদের মতো পরিবারের জন্য অনেক| দিন দুয়েকের মধ্যে তো দূর, বছরখানেকের মধ্যেও জোগাড় করতে পারবে কিনা সন্দেহ! রিসেপশন ডেস্কে বসা গোলাপি ইউনিফর্ম পরা মহিলার কাছ থেকে টাকার অঙ্কটা শোনার পরপরই মন্দ্রার মনে হল মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া বোধহয় একেই বলে| এত টাকা জোগাড় করার সামর্থ্য নেই তার, তবে কি বাবা আর প্রাণে বাঁচবে না? মা কেমন ছিল ভাল করে মনেও নেই তার, অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করতে না পেরে তাকে ফেলে পালিয়েছে| বাবাই খেয়ে না খেয়ে পক্ষী মাতার মতো বুকে আগলে রেখেছিল এতদিন| কিন্তু বাবাই যদি তারাদের দেশে চলে যায়, একলা কিভাবে বাঁচবে মন্দ্রা? কথাটা ...

Pride is terrible bangla golpo

  যার ভালোবাসা গভীর তার অভিমান ভয়ংকর | He whose love is deep his pride is terriblehoop English convert scroll 👇 মানুষকে কখনও একা কাঁদার সময় দিতে নেই জানেন! একবার কেউ একা কাঁদতে শিখে গেলে, তার আর কারও প্রয়োজন হয় না।  -আগে জানতাম না, তবে এখন জানি। মেয়েদের অভিমান ভালোবাসার চেয়েও ভয়ংকর।  -আংশিক ভুল জানেন আপনি।  -সঠিকটা তবে জানিয়ে দিন।  -যার ভালোবাসা যত গভীর, তার অভিমান তত ভয়ংকর।  -আপনি বলছেন যখন, মেনে নিলাম।  -আপনার ভালোবাসতে ইচ্ছে করে না জ্যোতিষ্ক?  -করে তো! কিন্তু জীবনের সাময়িক উদ্দেশ্য পূরণের স্বার্থে এমন কিছু ব্যক্তিগত ক্ষতি হয়ে গেছে, যা আমি চাইলেও ফেরাতে পারব না। আপনার গল্প বলুন ম্যাডাম। যাঁরা ভালোবাসতে জানেন, তাঁদের কাছে ভালোবাসার গল্প শুনতে ভালো লাগে।  -আমি আর কী বলব? যখন মন ভুল পথনির্দেশ দেয়, তখন সঠিক পথে হাঁটার জন্য নিজের মনের বিরুদ্ধে যেতে হয়। আমিও গেছি, এখন একরকম ভালোই আছি।  -সত্যিই ভালো আছেন? কতটা ভালো আছেন? জানতে ইচ্ছে করে।  -ঠিক জানি না। কী পেয়েছি, কতটা হারিয়েছি, সেই হিসেব রাখি না। আজকাল নিজের ভালো থাকার চেয়েও, অন্যের ভাল...